যৌথভাবে ফেনী নদীর ওপর নির্মিত মৈত্রী সেতুুকে দুই দেশের মধ্যে নতুন ‘বাণিজ্য করিডোর’ হিসেবে বর্ণনা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ফেনী সীমান্তে মৈত্রী সেতুর মাধ্যমে আমাদের (বাংলাদেশ-ভারত) মৈত্রীকে আরও জোরদার করা হলো। বিগত কিছু বছরে রেল, পানি ইত্যাদি নিয়ে যেসব চুক্তি ছিল- এই সেতুর মাধ্যমে তা আরও জোরদার হলো।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যৌথভাবে ফেনী নদীর ওপর নির্মিত ‘মৈত্রী সেতুু’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, ত্রিপুরায় আজ যোগাযোগ তথা সড়কপথ, বিমানপথ এবং রেলপথের উন্নয়নের পাশাপাশি প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট সুবিধার মাধ্যমে জনগণের জীবনকে আরও সহজ করে তুলছে। সেই সঙ্গে তাদের অর্থনৈতিক দিকেরও উন্নয়ন হচ্ছে।
মোদি বলেন, এই সেতুর ফলে ত্রিপুরার তথা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধন একদিকে যেমন সমৃদ্ধির পথে আছে, তেমনি দুই দেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। দুই দেশের অর্থনৈতিক বন্ধনও সুদৃঢ় হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নির্মিত এই মৈত্রী সেতুর কারণে পণ্য পরিবহন এবং পর্যটন খাত আরও উন্নত হবে। ফলে, পণ্য পরিবহনের জন্য এখন আর আপনাদের শুধু সড়কপথের ওপর ভরসা করে বসে থাকতে হবে না, বাংলাদেশের সড়ক, নদী ও সমুদ্রপথেও সুবিধা পাবে এই রাজ্য।
তিনি বলেন, ফেনীর কাছেই চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর রয়েছে। এ সেতু দিয়ে সমুদ্রবন্দর দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়া সহজ হবে। সেখানে ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট বানানোর কাজও শুরু হয়ে গেছে। আগরতলা ভারতের সবচেয়ে কাছের শহর হয়ে যাবে। ত্রিপুরার কৃষকরা তাদের পণ্য বাইরে পাঠাতে পারবে। নিজেদের উৎপাদিত পণ্য তারা বিদেশে রপ্তানি করবে।
ফেনী নদীর ওপর ভারতীয় মুদ্রায় ১৩৩ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫৪ কোটি টাকা) ব্যয়ে নির্মিত ১ দশমিক ৯ কি.মি. দীর্ঘ সেতুটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের ফলে ত্রিপুরা ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রবেশ দ্বার হয়ে উঠতে যাচ্ছে। দুই দেশের সীমান্তে ওপর দিয়ে প্রবাহিত ফেনী নদীর ওপর নির্মিত এই সেতু ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের খাগড়াছড়ির রামগড়কে সংযুক্ত করেছে। দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী এ সেতু উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এ প্রথম কোনো নদী সেতু উদ্বোধন হলো। ফেনী নদীতে এ সেতুর নাম রাখা হয়েছে ‘মৈত্রী সেতু’। একইসঙ্গে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী ত্রিপুরার সাবরুমে একটি ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্টেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবও বক্তব্য দেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।